কক্সবাজারে দোকানের সামনে কাভার্ড ভ্যানের চাপায় দোকানির মৃত্যু, দৌড়ে বাঁচলেন কর্মচারী

বিশেষ প্রতিবেদক •

কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলায় কাভার্ড ভ্যানের ধাক্কায় সড়কের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন।

গতকাল বুধবার দিবাগত রাত পৌনে ২টার দিকে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের চকরিয়া উপজেলার বানিয়ারছড়া স্টেশন এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। দুর্ঘটনার পর স্থানীয় লোকজন মহাসড়ক অবরোধ করলে দুই ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ থাকে। এতে অন্তত চার কিলোমিটার এলাকায় দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। পরে ভোররাত ৪টার দিকে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক করে।

নিহত ব্যক্তির নাম জসিম উদ্দিন (৪৫)। তিনি বানিয়ারছড়া স্টেশন এলাকার আবু সুফিয়ান কুলিং কর্নার নামের একটি চায়ের দোকানের মালিক। জসিমের বাড়ি বান্দরবানের লামা উপজেলার ফাইতং ইউনিয়নের নয়াপাড়া এলাকায়।

স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, জসিম গতকাল দিবাগত রাত ১টা ৪০ মিনিটের দিকে দোকান বন্ধ করছিলেন। এ সময় চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজারমুখী একটি কাভার্ড ভ্যানের চালক নিয়ন্ত্রণ হারালে এটি জসিমের দোকানের সামনে এসে তাঁকে ধাক্কা দেয়। দোকানের কর্মচারী মো. সাজ্জাদ ইসলাম (১৮) দৌড়ে বাঁচলেও জসিমের মৃত্যু হয়।

দোকানের কর্মচারী সাজ্জাদ ইসলাম বলেন, ‘দোকানটি মহাসড়ক থেকে প্রায় চার ফুট উঁচুতে। হুজুর (নিহত জসিম উদ্দিন) দোকানে তালা দিয়ে রাস্তায় নামছিলেন। এমন সময় কাভার্ড ভ্যান হুজুরকে ধাক্কা দেয়। আমি সরে যেতে পারলেও হুজুর নিজেকে রক্ষা করতে পারেননি।’

ঘটনার পরপরই ফাইতং এলাকার লোকজন ও বানিয়ারছড়া স্টেশনের ব্যবসায়ীরা লাশ নিয়ে মহাসড়ক অবরোধ ও বানিয়ারছড়া স্টেশন লাগোয়া চিরিংগা হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির বাতি ভাঙচুর করেন। একপর্যায়ে ক্ষুব্ধ লোকজন সড়কের ওপর টায়ার জ্বালিয়ে যান চলাচল বন্ধ করে দেন।

মহাসড়ক অবরোধের ফলে রাত ২টা থেকে ৪টা পর্যন্ত চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের বরইতলী রাস্তার মাথা থেকে ইসলামনগর পর্যন্ত চার কিলোমিটার সড়কে অন্তত দুই হাজার গাড়ি আটকা পড়ে। পরে চকরিয়া সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার তফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে চকরিয়া থানা থেকে অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে যান চলাচল পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে।

চিরিংগা হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির পুলিশ পরিদর্শক মো. মুর্শেদুল আলম চৌধুরী বলেন, স্থানীয় লোকজন উত্তেজিত হয়ে পুলিশ ফাঁড়ির সামনের সড়কে অবস্থান নিয়েছিলেন। পরে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বিষয়টি তাঁদের বুঝিয়ে বলার পর তাঁরা সড়ক থেকে সরে গেছেন। নিহত জসিমের লাশ স্থানীয় লোকজন বাড়িতে নিয়ে গেছেন। পরিবারের লোকজন বিনা ময়নাতদন্তে লাশ দাফনের জন্য আবেদন করেছেন।